রুট করার আগে ও পরের প্রশ্নাবলী

রুট কি? করলে কি হবে?
সবচেয়ে সহজ শব্দে বলা যায়, রুট হচ্ছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা প্রশাসক। যদিও এর
বাংলা অর্থ গাছের শিকড়, লিনাক্সের জগতে রুট বলতে সেই পারমিশন বা অনুমতিকে বোঝায় যা ব্যবহারকারীকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করে তোলে (অবশ্যই কেবল সেই কম্পিউটার, ডিভাইস বা সার্ভারে!)। রুট হচ্ছে একটি পারমিশন বা অনুমতি। এই অনুমতি থাকলে ব্যবহারকারী সেই ডিভাইসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারকারী অ্যাডমিনিস্ট্রেটর প্রিভিলেজ ছাড়া সিস্টেম ফাইলগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন না (যেগুলো সাধারণত সি ড্রাইভে থাকে)। লিনাক্সেও তেমনি রুট পারমিশন প্রাপ্ত ইউজার ছাড়া সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজগুলো করা যায় না। যিনি লিনাক্স-চালিত কম্পিউটার বা সার্ভারে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন অথবা যার সব কিছু করার অনুমতি রয়েছে, তাকেই রুট ইউজার বলা হয়। অনেক সময় একে সুপারইউজার বলেও সম্বোধন করা হয়ে থাকে। (কার্টেসি: এন্ড্রয়েড কথন)
আরো বিস্তারিত জানতে যান রুট কী ও
কেন, সুবিধা ও অসুবিধা।
Super User মূলত কি? এর কাজ কি? এই অ্যাপটি দিয়ে কি কি কাজ করা যায়?
Super User হল আপনার ডিভাইসের খোলা সিস্টেম এর দারোয়ান। কোন এপ যদি সিস্টেম ফাইলে উঁকিঝুঁকি মারতে চায়, কিছু এডিট ডিলিট করতে চায় তখনই Super User (বা SU) আপনাকে সেটা জানাবে। এখন আপনি বললেন যে হ্যাঁ এই এপ টা আমার পরিচিত, একে ঢুকতে দাও, তখনই Super User তাকে ঢুকার পারমিশন দিবে। যদি বলেন, না? এইডা কেডা? তাইলে সাফ এপটার মুখের উপর দরজা বেঁধে দিবে।
তাছাড়া এটা নোট করে রাখবে কখন কারে পারমিশন দেয়া হল।
রুট করার পর অটোমেটিক একটা সুপারইউজার অ্যাপ ডিভাইসে পাওয়া যায়। এটা রিমুভ করলে সমস্যা হবে কি?
রুট করার পর Super User তো থাকতেই হবে! নাইলে রুট অ্যাপ গুলার পারমিশন হ্যান্ডেল করবে কে? রিমুভ করে দিলে নতুন কোন রুট ফিয়েচার সম্বলিত অ্যাপ উইজ করতে পারবেন না, পারমিশন দিবে কে?
অনেক অ্যাপ আছে যা ডিভাইসে সেটাপ দিলে সুপারইউজার পারমিশন চায় না, অনেক অ্যাপ আবার পারমিশন চায়। এর কারণ কি? কোন অ্যাপ ভাল আর কোনটা মন্দ এটাই বা বুঝব কিভাবে?
সব অ্যাপকেই পারমিশন চাইতে হবে, চায় না এরকম কোন অ্যাপ নাই। আপনি যেটা বলতেসেন সেটা হল কোন অ্যাপকে একবার রুট এক্সেস দেয়ার পর আর চায় না কেন? ওটা হয় কারণ আপনি প্রথমবারই দেন “ALLOW ALWAYS” । প্রতিবার সিস্টেমে ঢুকার সময় Super User পারমিশন দেয়, ওই যে আপনি বলে দিসেন যে “ALLOW ALWAYS” তাই আপনাকে আর জিজ্ঞেস করে না, নিচে একটা টোস্ট ম্যাসেজ আকারে দেখায় যে “Access Granted to অমুক অ্যাপ”
রুট করা ছাড়া কি রম ব্যাকআপ রাখা যায় না? কেন?
আন রুটেড অবস্থায় সিস্টেম ব্যাকআপ নেয়া সম্ভব না। কারণ ব্যাকআপ নেয়ার জন্য সিস্টেম এক্সেস লাগে, কিন্তু রুট না করলে সিস্টেম এক্সেস [Example: /data/ ডিরেক্টরি] পাওয়া যায় না, সোজা কথায় Read, Write, Mod করা যায় না, Read Only অবস্থায় থাকে। সিস্টেম পাথ এক্সেস শুধু মাত্র রুট করলেই পাওয়া যায়।
রুট করার পর রম ব্যাকআপ রাখব কিভাবে? রিস্টোর করার পদ্ধতি কি?
রুট করার পর রম ব্যাকআপ রাখবেন রিকভারি মেনু তে গিয়ে। যেটা রুট করার পর System Recovery Image  আকারে ফ্ল্যাশ করা হয়,এটা পাবেন ফোন বন্ধ করে অন করার সময় ভলিউম ডাউন বাটন চেপে ধরে (যদি ফ্ল্যাশ করে থাকেন), রিস্টোর ও ওখান থেকে করা যায়।
রম এর ব্যাকআপ নিতে কত সময় লাগতে পারে? ব্যাকআপ এর পরিমাণ (সাইজ) কত মেগা/গিগা হতে পারে?
রম এর সাইজের উপর+ এসডি কার্ডের রাইট স্পিডের উপর ব্যাকআপ/রিস্টোরের সময় নির্ভর করবে। একইভাবে ব্যাকআপের সাইজের রম এর উপর নির্ভর করবে। এটা ৫০০ এম বি থেকে ২ জিবির মতও হতে পারে। + যদি এসডি কার্ডের পার্টিশন লিঙ্ক করেন তাইলে সেটার সাইজও ব্যাকআপের ভিতর ঢুকবে।
রুট করার পর ডিভাইসে ভাইরাস আক্রমণ করবে, স্বাভাবিক। ভাইরাস কি ফোনের পুরোপুরি কোনও ক্ষতি করতে পারে?
“রুট করার পর ডিভাইসে ভাইরাস আক্রমণ করবে, স্বাভাবিক।” এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। ইউজ জানলে আপনি রুট করে ডিভাইস আরো সিকিউর করতে পারেন। রুট করে ফেলসি মানে, আল্লাহ! যা তা আমার মোবাইলে ঢুকে যাবে!! এ রকম না। কোন এপ্লিকেশন সরাসরি রুট এক্সেস পায় না, প্রথমে “Super User” নামের একটা এপ থেকে পারমিশন নেয়, যেটা আপনি দিবেন। এখন একটা এপ্লিকেশন তখনই সিস্টেম ফাইল এডিট করতে পাবেন, যখন আপনি পারমিশন দিবেন। এখন যদি কোন ভাইরাসযুক্ত এপকে আপনি মনের সুখে রুট এক্সেস দেন, তাইলে তো ভাইরাস আক্রমণ করা স্বাভাবিক!
এবং, রুট এক্সেস পেলে কোন এপ আপনার সিস্টেম পুরা ক্রাশ সহ বুটলুপে ফেলে দেয়ার মত ক্ষমতা রাখে।  সিস্টেম এডিটে সামান্য ভুল মানেই সিস্টেম ক্র্যাশ।
ডিভাইসে ভাইরাস/ ম্যালওয়ার প্রবেশ করলে ডিভাইসটি ফ্যাক্টরি রিসেট দিলে কি সব ভাইরাস/ ম্যালওয়ার রিমুভ হয়ে ফোনটি একেবারে নতুনের মত (মার্কেট থেকে যেভাবে একটি সুস্থ ডিভাইস কিনেছিলাম সেরকম) হয়ে যাবে? না-হলে করণীয় কি?
যদি ডিভাইস আনরুটেড থাকে তাইলে তাইলে ফ্যাক্টরি রিসেট দিলে আপনার ভাষায় ফোন একদম নতুন হয়ে যাবে।আর যদি রুটেড হয় তাইলে দুইটা কুয়ারি থাকেঃ
i. কোন আবুল তাবুল সিস্টেম ফাইল ফ্ল্যাশ করসেন?
ii. নাকি করেন নাই?
i হলে. যদি আপনার ফ্ল্যাশ করা সিস্টেম এপ গুলার মধ্যে কোন ভাইরাস থাকে তাইলে ফ্যাক্টরি রিসেট দিলেও কিন্তু ওই এপ যাবে না। এখন আপনার যদি খুঁতখুঁত লাগে তাইলে রুট করার পর একদম প্রথমে নেয়া ব্যাকআপ টা রিস্টোর করতে পারেন (কারণ সেটা ছিল রুটেড অবস্থায় প্রথম ব্যাক আপ, তাই ভাইরাস থাকার পসিবিলিটি নাই) অথবা নেট থেকে ডিভাইসের অরিজিনাল ফার্মওয়ার ডাউনলোড করে ফ্ল্যাশাই দিলেও হবে, যদি তখন আনরুটেড হয়ে যাবে আবার, আই মিন পুরাপুরি নতুন।
ii হলে. ফ্যাক্টরি রিসেট।
রুট করার পর ভুলক্রমে যদি ডিভাইসে ভাইরাস ঢুকেও পড়ে, তাহলে আপনি বলেছেন ফ্যাক্টরি রিসেট দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। আবার কাস্টম রম এর মধ্যে ভাইরাস থাকলে ফ্যাক্টরি রিসেট দিলেও কাজ হবে না। বুঝলাম। কিন্তু ঐ ভাইরাসযুক্ত কাস্টম রম ডিভাইসে থাকলে ডিভাইসের হার্ডওয়্যার-এর কোন ক্ষতি করবে নাতো? এমতাব্স্থায় ডিভাইসে কোন সমস্যা হলে পরে অরিজিনাল স্টক রম দেওয়া যাবে কি কোন ঝামেলা ছাড়াই?
কাস্টম রমেও সাধারণত ভাইরাস থাকে না। আর হার্ডওয়্যার এর ক্ষতি হতে দেখি নাই এখনো, তবে রুটেড অ্যাপ গুলা যেকোন কিছুই করতে পারে, যেমন প্রসেসরের ক্লক স্পিড বাড়াতে কমাতেও পারবে, তাইলে ব্যাটারিও তাড়াতাড়ি ড্রেইন হয়ে যাবে, এগুলা অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা,  নতুন ফার্মওয়ার দিলে আবার সব নরমাল হবে যাবে।
রুট করার পর ডিভাইসের র‌্যাম (Ram) এবং রম এর পরিমাণ বাড়িয়ে ডিভাইসকে ফার্স্ট করব কিভাবে?
রম বাড়ানো যায় এসডি কার্ড পার্টিশন করে Link2SD দিয়ে (অবশ্যই রুট এক্সেস লাগবে), গুগল করেন। আর RAM বাড়ানো তা তেমন কার্যকরী না, আপনার SDCARD Class 10 (মানে যথেষ্ট দ্রুতগতি সম্পন্ন) হলে তখন কাজ করে হয়ত, তাও গুগল করেন, RAM EXPANDER নামে একটা এপ আছে এ কাজের জন্য।
রুট করার পর ডিভাইসে শুধুমাত্র কি অ্যাপ-এর মাধ্যমেই ভাইরাস/ ম্যালওয়ারে ঢুকে, নাকি অন্যভাবেও ঢুকে? যেমন: এসডি কার্ডে যদি কোন ভাইরাস/ ম্যালওয়্যার থাকে সেখান থেকে কি ডিভাইস আক্রান্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে?
এসডি কার্ডে যদি এমন ভাইরাস থাকে যা মোবাইল দিয়ে এক্সিকিউট করা সম্ভব (যেমনঃ কোন .sh স্ক্রিপ্ট) তাইলে ডিভাইস আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু এরকম হয় না আসলে, কারণ দেখিয়েন এসডিকার্ডের বেশির ভাগ ভাইরাস যেগুলা পিসি ঢুকালে সাথে সাথে হাউ মাউ শর্টকাট ভাইরাস বানাই ফেলে,সেই এসডিকার্ড মোবাইলে ঢুকালে ভাইরাস পুরা ভেদার মত বসে থাকে। কারণ হল এসব পিসির ভাইরাসের এক্সটেনশন হল .exe বা .inf যা এন্ড্রয়েডে এক্সিকিউট করা সম্ভব না, যার দৌড় শুধু পিসি পর্যন্ত। তাই এরা নিষ্ক্রিয়। একইভাবে এন্ড্রয়েডের .apk ফাইল সরাসরি পিসিতে রান করা সম্ভব না।
Share this article :

Post a Comment

 
Copyright © 2014. xdabd - All Rights Reserved
Template Created by হোছাইন আহম্মদ