কিভাবে রুট করে এবং কি কি লাগে ইত্যাদি

আজকে আমরা জানবো সিস্টেম পাথ কি, এগুলো কোথায় থাকে এবং সেই মিলিয়ন ডলার প্রশ্নের উত্তর,কিভাবে রুট করে এবং কি কি লাগে।
কিভাবে রুট করে সেটা দেখে ঝাপাই পড়ার কোন দরকার নাই, আমি আপনার নির্দিষ্ট ডিভাইস কেমনে রুট করে সেটা নিয়ে বলতে যাচ্ছি না। আপনাকে কতগুলো টিপস আর হিন্টস দিব যাতে সহজে রুট করার যাবতীয় টুলস খুজে পান আর সমস্যায় পড়তে না হয়।এগুলা না করলে আপনার ফোন মাঝে হ্যাং খাই বসবে আর আপনি মাশাআল্লাহ পুরো ফেসবুকের সব গ্রুপে কান্দি ভাসায় ফেলবেন। :v
(রুট সম্পর্কে ধারণা না থাকলে দয়া করে আগের আর্টিকেল পড়ে আসেন এখানে ক্লিক করে, নাইলে আপসারাপ এটা পড়ে সব মাথার উপর দিয়ে যাবে)

আমরা গত পর্বে শিখলাম যে রুটিং মানে সিস্টেম পাথ এক্সেস পাওয়া যাতে আমরা সিস্টেমের যে কোন পরিবর্তন/পরিবর্ধন/পরিমার্জন করতে পারি। �এখন কথা হল সিস্টেম পাথ(Path) আবার কি?
এটার মানে হল ফোন যেসব ফাইল ছাড়া অন ই হতে পারে না(অর্থাৎ কোর ফাইল) , যেসব এপ্লিকেশন থাকা আবশ্যক, আপনার ইন্সটল করা এপ্লিকেশন, সবকিছু থেকে সেইভ করে রাখা ড্যাটা ইত্যাদি সবকিছু ভিতরে রাখে। নিজের রাখা জিনিস যেন খুঁজে পায় সেজন্য আবার সাজিয়ে সাজিয়েও রাখে। যেমনঃ সিস্টেমের যাবতীয় ফাইল রাখে “/system” পাথে (বা ডিরেক্টরিতে,যেটা দিয়ে বুঝতে আপনার সুবিধা হয়) ।যেসব এপ্লিকেশন আপনি আনইন্সটল করতে পারেন না সেগুলো থাকে “/system/app” ডিরেক্টরিতে, ফন্ট থাকে “/system/fonts” এ, বিভিন্ন ফন্ট চেঞ্জার এপগুলো এখানের ফাইল গুলা নিয়ে কারিকুরি করে ফন্ট চেঞ্জ করে। এভাবে সব জিনিস গুছানো থাকে। তারপর থাকে “/data” পাথ। এখানে অন্যসবকিছুর সাথে আপনার ইন্সটল করা এপ্লিকেশন গুলো থাকে, তাদের সেইভ করা ডাটাগুলো থাকে। এমনকি আপনার লকস্ক্রিনের প্যাটার্ন কি, পাসওয়ার্ড কি ও থাকে। তাইলে বুঝতেসেন এগুলোকে সিকিউর করে রাখা অনেক জরুরি, নাইলে সবাই আপনার ড্যাটা চুরি করে ফেলতে পারবে। সেজন্য প্রথম দিকে যখন আপনি কিছুই বুঝেন না, দুধের বাচ্চা, তখন সবকিছু লক করে দেয়। এরপর আঙ্গুল চুষতে চুষতে যখন বুঝতে শিখেন যে, এগুলো নিয়ে আমি ঘাঁটবো কিন্তু অন্য কাউকে দেখতেও দিবো না, তখন মোবাইল রুট করে ফেলেন। রুট করে ফেললে যে এগুলো একদম সবাই পরে ফেলতে পারবে এমন কিছুও না।কারণ তখন “SuperUser” নামে একটা এপ্লিকেশন থাকে যেটা সব পারমিশন নিয়ন্ত্রন করে। আচ্ছা, তাইলে তিনটা পাথের নাম জানি,
“/ ” এটাকে বলে Root Path, সবার প্যারেন্ট ডিরেক্টরি।
“/system ” এটাকে বলে সিস্টেম পাথ।
“/data ” এটাকে বলে ড্যাটা পাথ।
এবার আসা যাক রুট কেমনে করে সেটা নিয়ে।
রুট করাকে আমরা বাঘের মুখ থেকে মোবাইল ফিরিয়ে আনার মত কঠিন কাজ হিসেবে চিন্তা করি, কারণ পিচ্চিকাল থেকে আমাদের মধ্যে একটা ভয় ঢুকাই দেয়া হইসে যে সেট ব্রিক হয়ে যাবে, তখন তো আর চলবে না। আরে ভাই আজিব, একটা মেথড জেনেও আপনার যেখানে এত ভয় লাগতেসে, সেখানে যে এই প্রথম মেথড টা বানাইসে তার কি অবস্থা ছিল? সেতো ৫০-৫০ চান্স দিয়ে নিজের মোবাইলকে কুরবানী করে দিতে চাইসিলো। তার সাথে আপনার অবস্থা চিন্তা করেন
আচ্ছা যাই হোক,রুট করার মেথড খুজেঁ পাওয়া নিয়ে আলোচনা হোক। রুট করার সময় মেথড খুঁজে পেতে ব্রান্ড আর নন-ব্রান্ডের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। কারণটা হল ব্রান্ডের সেটগুলো ওয়ার্ল্ডওয়াইড বিক্রি হয়, ফলে এর যেমন পুরো বিশ্বজুড়ে ইউজার থাকে তেমনি ডেভেলপারও থাকে। এতে তাদের শেয়ার করা মেথড খুব সহজেই পাওয়া যায়, ইউজার রিভিউ পাওয়া যায় ইত্যাদি। যেমনঃ প্রায় ব্রান্ডেড সেটগুলা xda-developers ওয়েবসাইটে(যেটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ডেভেলপারদের ওয়েবসাইট) অন্তর্ভুক্ত থাকে ফলে যেকোন ব্রান্ডের রুটিং মেথড খুঁজে পাওয়া তেমন কষ্ট না।
কিন্তু নন-ব্রান্ডেড সেটের ক্ষেত্রে গুগল করে রুটিং মেথড খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টের আর বিদেশ থেকে নন-ব্রান্ড ইম্পোর্ট করে আনলে তো মাশাল্লাহ,আপনি খুঁজতে খুঁজতে আমার বাচ্চাকাচ্চা হয়ে যাবে।
গুগল করে যদি না পান, এক্ষেত্রে আপনার প্রথম পদক্ষেপ হোক আপনার সেটের নামে ফেসবুকে সার্চ করুন, কোন না কোন গ্রুপ পাবেন ই! এসব গ্রুপে শুধু ওই ফোনের সব ট্রিক্স শেয়ার হয় বলে আপনার লাভও হবে, শুধু প্রথমে জয়েন করেই কিছু জিজ্ঞেস করে ফেলবেন না। গ্রুপের ডকে খুঁজবেন, দেখবেন থাকবেই, কারণ এটাই এন্ড্রয়েডের সব কাস্টমাইজেশনের জন্য লাগে। না পেলে তখন জিজ্ঞেস করবেন, কোন না কোন পথ পাবেন ই।
ফেসবুক, গুগল কোথাও যদি না পান তাইলে তো কিছু করার নাই।
তবে গুগল সবচেয়ে বেশি সুবিধার, কারণ এখন সব মোবাইল ম্যানুফ্যাচারার-এর ফোরাম থাকে, যেখানে বিভিন্ন ট্রিক্স থ্রেড আকারে পোস্টানো হয়।
ধরি আপনি রুট করার মেথড পেয়ে গেলেন, এবার যেসব ফাইল লাগে সব নামাই ফেলেন। সাধারণত দুই পদ্ধতিতে রুট হয়, ১।সোজা ২।মোটামুটি সোজা
সোজা মেথড টা হল Framaroot. যদি এই এপ্লিকেশনটা দিয়ে আপনার মোবাইল রুট করা যায় বলে দেখেন তাইলে পিসির দরকার নাই।পিসি ছাড়াই এপ্লিকেশন টা ইন্সটল করে আপনার পাওয়া মেথড ব্যবহার করবেন। রুট হয়ে যাবে।
মোটামুটি সোজা মেথডে পিসি লাগে, এক্ষেত্রে মোবাইলের ড্রাইভার জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ইম্পরট্যান্ট। ড্রাইভার ইন্সটল না করলে পিসি বুঝে না যে আপনার মোবাইল তার সাথে কানেক্ট করা আছে। তাই মেথডে লেখা থাকে কিভাবে ড্রাইভার ইন্সটল করতে হয়। পিসি দিয়ে রুট করার সময় আরো কিছু জিনিস লাগে তা হল ADB Driver আর Fastboot Driver (এগুলো কি সেটা পরে আলোচনা হবে)। তাইপিসি দিয়ে রুট করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যেন এই তিনটা জিনিস থাকে (কই পাবেন? যে পোস্টে রুট করার মেথড পাইসেন তারাই বলে দিবে) । ADB driver না থাকলে কোন শেল স্ক্রিপ্ট আপনার মোবাইলে চলতে পারবে না, ফলে রুট হবে না। Fastboot Driver না থাকলে আপনার মোবাইল বন্ধ হয়ে গেলে তখন পিসি বুঝবে না আসলে কোন ডিভাস বন্ধ অবস্থায় (Fastboot মুডে) কানেক্টেড আছে কিনা। এখনের সব রুটিং টুল ওয়ান ক্লিক এই কাজ করে, আপনার কাজ হল এগুলো সব ইন্সটল আছে কিনা দেখা। সব থাকলেই রুট হয়ে যাবে। (এতটুকে মাথা ঘুরালে রুট করিয়েন না, অনেক ধৈয্যের ব্যপার এটা)�আর একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন এসময় অরিজিনাল ক্যাবল ও ভালো ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করবেন। এগুলোর জন্যও অনেক সময় পিসি মোবাইল ডিটেক্ট করতে পারে না। সাকসেসফুলি রুটেড হলে দেখবেন আপনার মোবাইলে নতুন একটা এপ্লিকেশন আসছে যার নাম “SuperUser” বা “SuperSU”
চলবে…তারপর আসছে কিভাবে রিকভারি ইন্সটল করবেন, ব্যাক আপ নিবেন, তারপর সিস্টেম ফাইল নিয়ে বিভিন্ন খেলাধুলা..
Share this article :

Post a Comment

 
Copyright © 2014. xdabd - All Rights Reserved
Template Created by হোছাইন আহম্মদ