জেনে নিন কিভাবে কম্পিউটার ক্রাশ হয় ও এর প্রতিকার কি?

কিছুদিন আগেও পিসির আকৃতি ছোট করার আর এটা যাতে সবাই কিনতে পারে সেই দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হত। তারা হার্ডওয়্যার তৈরির সময় সবচেয়ে কম দামের পার্টস ব্যবহার করত আর সফটওয়্যার লেখার সময় বিপদজনক শটকাট ব্যবহার করত। তাছাড়া ধীর গতির পিসিতে ভাল পারফরমেন্স
পাবার আশায় অপারেটিং সিস্টেম, সকল এপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ও ডিভাইস ড্রাইভার চালানোর জন্য মেইন মেমরির একটি নির্দিষ্ট স্পেস ব্যবহার করত। আর এগুলোর মধ্যে যদি কোন একটিতে ক্ষতিকর বাগ থাকত তাহলে তা পুরা সিস্টেম কে অচল করে দিত। সব সফটওয়্যার নির্দিষ্ট ও অরক্ষিত স্পেস ব্যবহার করত। জার ফলে যেকোনো সফটওয়্যারে একটি সমস্যা থাকলে তা অন্য সফটওয়্যার এ ছড়িয়ে পড়ত। যার ফলে সিস্টেম ক্রাশ হয়ে যেত।
কিন্তু আগেরকালের পিসিগুল যথেষ্ট বিশ্বত ছিল তাদের সহজ ও সরল আর্কিটেকচারের জন্য। আর এখনকার পিসিগুলোতে আগের কালের পিসিগুলোর তুলনায় বেশি ক্রাশ হয়। কারন বর্তমানে পিসির জটিল আকার ধারন করা। আরও কারন আছে ক্রাশ হওয়ার । পিসির বর্তমান অপারেটিং সিস্টেম এর কোড সাইজের স্বাভাবিক বাড়ার কথাই ধরুন। ১৯৯২ সালের উইন্ডোজ এনটি এর অরিজিনাল ভার্সনে সোর্স কোডের সংখ্যা ছিল ৪ মিলয়ন লাইন। আর ১৯৯৬ সালে রিলিজ হওয়া এনটি ৪.০ এ সোর্স কোডের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১৬.৫ মিলিয়ন। এর পরে যে উইন্ডোজ এনটি’র ৫.০ ভার্সন বের হলে তাতে সোর্স কোডের পরিমাণ আসল ৩০ মিলিয়ন লাইন । এবার বুঝেন ঠ্যালা শতকরা বাড়ার হার ৬ বছরে ৭০০%।
যদি এখানে কোন ক্ষতিকর বাগ থাকে তাহলে সিস্টেম ক্রাশ হতে কতক্ষণ লাগবে আপনারাই বের করেন? অনেক সময় সফটওয়্যার এর সমস্যার কারনেও এটি হতে পারে । যখন কোন সিস্টেম ক্রাশ করে তখন সফটওয়্যার গুলো ফেইল করে। যদি এটি কোন এপ্লিকেশন হয় তাহলে আপনাকে আনসেভড কাজ গুলা হারাতে হবে। তবে উন্নতমানের অপারেটিং সিস্টেম অবশ্যই অন্যান্য প্রোগ্রামের মেমোরি পার্টিশন রক্ষা করবে। অনেক সময় ক্রাশ করা প্রোগ্রামটি আর অনেক প্রোগ্রাম এ সমস্যা সৃষ্টি করে ফলে পুরা সিস্টেম অচল য়ে যায়। তখন পিসি রিবুট করা ছাড়া উপাই নাই। আবার অপ্রত্যাশিত রিবুট হার্ডডিস্কে নানান জঞ্জাল বানাতে পারে। তার ফলে আপনার হার্ডডিস্ক ক্রাশ করতে পারে। তার পর আপনাকে নতুন হার্ডডিস্ক লাগাতে হবে।
আবার ভাইরাস এর কারনেও সিস্টেম ক্রাশ হতে পারে। আবার নতুন এক ঝামেলা হইল কম্পিউটার এর হার্ডওয়্যার চুরি। বিশেষ করে র‌্যাম চুরি । র‌্যাম চুরির ফলে সিস্টেম অন হওয়ার সময় প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার এর অভাবে আপনার সিস্টেম ক্রাশ করবে।
ক্রাশ প্রতিরোধ এর কিছু উপায় জেনে নিন এক নজরে……..
১) ভাল মানের এন্টিভাইরাস ব্যবহার করেন। যেমন, নরটন এন্টিভাইরাস। এন্টিভাইরাস আপনার মেমরির কিছু অংশ হয়ত দখল করবে। কিন্তু এটি আপনার কম্পিউটার কে ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখবে। আর প্রতি ৩ মাস পর পর আপনার এন্টিভাইরাস টি আপডেট দিন। আর মাসে অন্তত আপনার এন্টিভাইরাস দিয়ে সম্পূর্ণ পিসি স্ক্যান করুন। কোন কিছু ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড দেয়ার পর স্ক্যান করে নিন।
২) আপনার কোন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এর ব্যাকআপ করে নিন। যদিও এটি একটি বিরক্তকর জিনিস। কিন্তু সিস্টেম ক্রাশ হলে আপনার অই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল টি যদি না খুজে পাওয়া যায় তাহলে ঐটা মনে হয় নষ্ঠ হবে।
৩) সপ্তাহে অন্তত আপনার ড্রাইভ গুলো স্ক্যান ডিস্ক দিয়ে স্ক্যান করিয়ে নিন। এর জন্য আপনার ড্রাইভ এর উপর রাইট ক্লিক করে প্রপারটিজে এ ক্লিক করুন। তার পর টুলস ট্যাব এ প্রবেশ করে স্ক্যান ডিস্কে ঢুকে আপনার ড্রাইভ টি স্ক্যান করুন। এটি আপনার হার্ডডিস্ক টি চেক করে এরর গুলো রিপেয়ার করে দিবে।
৪) প্রতি মাসে অন্তত একবার আপনার ড্রাইভ গুলো ডিফ্রাগমেন্ট করে নিন। এতে আপনার পিসির পারফরমেন্স বাড়বে।
৫) স্টার্ট আপ থেকে অপ্রয়োজনীয় ফাইল ডিলিট করে ফেলুন।
৬) অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইন্সটল করবেন না। করা থাকলেও আনইন্সটল করে ফেলুন।
৭) বেশি প্রোগ্রাম একসাথে রান করবেন না। ফলে আপনার মাল্টিটাস্কিং সুবিধা নিতে গিয়ে সিস্টেম রিসোর্চ ঘাটতি ঘটে আপনার সিস্টেম ক্রাশ করবে।
৮) ক্রাশ প্রটেক্টর সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।
Share this article :

Post a Comment

 
Copyright © 2014. xdabd - All Rights Reserved
Template Created by হোছাইন আহম্মদ